Spread the love

NIN365 Desk, Kolkata :  বরফ কোথায় গেল? জানুয়ারির ১০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। অন্যান্য বছর এই সময়, কাশ্মীর উপত্যকার গুলমার্গ, পহেলগাঁও, সোনমার্গের মতো পর্যটনস্থলগুলি ঠেকে যায় বরফের সাদা চাদরে। ৫ থেকে ৬ ফুট পুরু বরফে ঢেকে যায় পুরো উপত্যকা। বিশেষ করে গুলমার্গে তো এই তুষারপাতকে কেন্দ্র গডে উঠেছে বেশ কিছু স্কিইং রিসর্টও। হাতের কাছে বরফ পেতেই, এই সময় কাশ্মীরে ভিড় জমান পর্যটকরা। কিন্তু, এবার কোথাও বরফ নেই। গুলমার্গ থেকে শুরু করে, কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনস্থলগুলি এবার একেবারে তুষারহীন। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেল্স দলের নেতা ওমর আবদুল্লাও। কিন্তু, গেল কোথায় বরফ?

আসলে, এবার শীতে কাশ্মীর উপত্যকায় এক অদ্ভুত শুষ্ক আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে, কাশ্মীর উপত্যকায় ৭৯ শতাংশ বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রয়েছে। আর সেই কারণেই দেখা নেই বহুল প্রত্যাশিত তুষারপাতের। এই অসঙ্গতিটির কারণ ‘এল নিনো’ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এল নিনোর প্রভাবেই এই অঞ্চলে তুষার ও বৃষ্টির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এল নিনো হল এক বিশেষ জলবায়ুগত অবস্থা, যার প্রভাব গোটা বিশ্বের আবহাওয়ার উপর পড়ে। মধ্য ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রার বৃদ্ধি পেলে, যে অবস্থায় সৃষ্টি হয়, তাকেই বলা হয় এল নিনো। এর প্রভাবে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় জেট স্ট্রিম দক্ষিণ দিকে সরে যায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, এল নিনোর প্রভাবে, বিশেষ করে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে সাধারণত গড় বৃষ্টিপাত কমে যায়।

কাশ্মীরেও তাই ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। সামনের কয়েক দিনেও যে কাশ্মীর উপত্যকায় বরফ পড়বে, তার কোনও পূর্বাভাস দিচ্ছেন না আবহাওয়াবিদরা। তাঁরা জানিয়েছেন, অন্ততপক্ষে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত এই শুষ্ক আবহাওয়ার অবস্থা চলবে। আগামী কয়েকদিনে কোনও বড় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। আবহাওয়া এবং জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা আরও সতর্ক করেছেন, কাশ্মীর উপত্যকায় ভবিষ্যতে আরও ঘন ঘন খরা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের সূচকগুলি এই অঞ্চলে ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে কৃষিক্ষেত্রে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে হিমবাহগুলির আকারও ক্রমে সঙ্কুচিত হচ্ছে। তার উপর, এই বছর তুষারপাত না হওয়ায় হিমবাহ সঙ্কোচনের হার আরও বাড়তে পারে। এর ফলে, ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নীচে নেমে যেতে পারে। যার প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে কৃষিতে। কাশ্মীরের অন্যতম কৃষিজাত পণ্য হল কেশর। দীর্ঘমেয়াদি শুষ্ক দশা তাদের ফসলের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন কেশর চাষীরা।

শুষ্ক অবস্থায় প্রভাব পড়েছে, কাশ্মীরের অর্থনীতির মূল চালিক শক্তি, পর্যটনেও। জানুয়ারিতে বরফ দেখবেন বলেই অনেকে কাশ্মীর ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন। যাঁরা ইতিমধ্যে এসে পড়েছেন, তাঁরা হতাশ। আর যারা এখনও আসেননি, তাঁদের অনেকেই ভ্রমণ বাতিল করছেন। এই অবস্থায় কাশ্মীরে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য প্রার্থনা করছেন। তুষারপাত না হওয়ায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেনতাঁরা। স্লেজ গাড়ি চালায় যারা, যারা গাইড – প্রত্য়েকেই এই ক্ষতির ভাগিদার।

Spread the love

DISCLAIMER

Our news media denounces any form of bias and disapproves of sensationalism. The disseminated news is entirely educational and aimed at social awareness. Our media maintains absolute impartiality, adhering solely to the purpose of education and social consciousness.

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version