Spread the love

NIN365 Desk, Kolkata :  চিনপন্থী মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুকে যে ভারত পছন্দ করছে না, তা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছিল দিল্লি। সূত্রের খবর চিন সফরের আগে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে পরে ভারত সফরের জন্য আবেদন করেছিল মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের অফিস। যদিও ভারতের তরফে এখনও পর্যন্ত অনুমোদন মেলেনি! কেন? নেপথ্যে কী মুইজ্জু বেজিং ঘেঁষা মনোভাব?

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করেছেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। কিন্তু তাতে বিতর্ক ধামাচাপা পড়েনি। বরং সে দেশের বিরোধী নেতাদের সম্মিলিত নিশানার মুখে পড়েছেন চিনপন্থী মুইজ্জু। এমনকি, তাঁকে বরখাস্ত করার জন্য পার্লামেন্টে বিরোধী নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আনতে পারেন বলেও শোনা গিয়েছে।

গত সপ্তাহে মুইজ্জু সরকারের তিন মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের পরেই মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা ইব্রাহিম সোলি (যাঁকে ভোটে পরাজিত করে মুইজ্জু ২০২৩ ক্ষমতায় এসেছেন) তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। আর এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদও প্রতিবাদ করেছিলেন মোদী অবমাননার। মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান ফয়াজ় ইসমাইল প্রকাশ্যে ‘পিপল্‌স ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর নেতা মুইজ্জুকে দুষে ভারতের সঙ্গে ‘সম্পর্কের ক্ষত’ মেরামতের ডাক দিয়েছেন।

ঘটনাচক্রে, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু সোমবার থেকে পাঁচ দিনের চিন সফরে গিয়েছেন। তারই মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিয়া আহমেদ দিদি সরাসরি মালে-নয়াদিল্লি সম্পর্ক নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন মুইজ্জুর বিরুদ্ধে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মুইজ্জুর দল ‘পিপল্‌স ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর নেতাদেরও তাঁর সমর্থনে মুখ খুলতে দেখা যাচ্ছে না তেমন।

তিন মন্ত্রীর মোদী-বিরোধী মন্তব্যের পরেই সোমবার মলদ্বীপের পার্লামেন্টের বিরোধী নেতা আলি আজ়িম নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “আমরা চাই দেশের বিদেশনীতিতে স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক এবং কোনও প্রতিবেশী দেশকে কোণঠাসা করার চেষ্টা বন্ধ হোক।” তার পরই তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, প্রেসিডেন্ট পদে থাকার মতো যোগ্যতা মুইজ্জুর রয়েছে কি না। এর পাশাপাশি তিনি প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলেন। ডেমোক্র্যাটিক দলের আর এক নেতা মিকাইল নাসিম আবার বিদেশমন্ত্রীকে তলব করে কৈফিয়ত চাওয়ার জন্য পার্লামেন্টকে অনুরোধ করেছিলেন।

কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, গত সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘চিনপন্থী’ নেতা মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা নিয়ে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এই আবহে সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন মোদী। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযোগ, মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী, মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাহজ়ুম মাজিদ কিছু ছবিতে মোদীকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। পরে অবশ্য বিতর্কের মুখে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়। চাপের মুখে রবিবার সাসপেন্ড করা হয় ওই তিন মন্ত্রীকে।

সূত্রের খবর, ১৭ নভেম্বর নতুন প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণের আগেই ভারত সফরের প্রস্তাব করেছিল মালদ্বীপ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সময় চেয়েছিল দ্বীপরাষ্ট্র। মালদ্বীপ সরকার এখনও ওই বিষয়ে ভারতের অনুমোদনের অপেক্ষা রয়েছে। এর থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট। একদিকে যেমন প্রকাশ্যে চিনের দিকে ঝুঁকছেন মুইজ্জু, অন্যদিকে নতুন প্রেসিডেন্টের ভারত বিরোধিতাকে ভালোভাবে নেওয়া হচ্ছে না, বুঝিয়ে দিচ্ছি দিল্লি।

উল্লেখ্য, শপথগ্রহণের পর মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের ভারত সফর বহুদিনের রেওয়াজ। যদিও সাম্প্রতিক চিন সফরের আগে তুরস্ক এবং ইউএই তে সফর করেন মুইজ্জু। এদিকে চিনপন্থী প্রেসিডেন্টকে সরানোর দাবি উঠছে খোদ দ্বীপরাষ্ট্রেই। সুখে-দুঃখে পাশে থাকা দীর্ঘদিনের বন্ধু ভারতের সঙ্গে তিক্ত সম্পর্ক মেনে নিতে পারছেন না সে দেশের রাজনৈতিক মহলের বড় অংশ। এই অবস্থায় মালদ্বীপের সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, চিন সফরের পরেই মোদির সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যাবেন মুইজ্জু।

Spread the love

DISCLAIMER

Our news media denounces any form of bias and disapproves of sensationalism. The disseminated news is entirely educational and aimed at social awareness. Our media maintains absolute impartiality, adhering solely to the purpose of education and social consciousness.

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version